দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের বিন্দুরচর গ্রামে লোকালয়ে গড়ে ওঠা একটি পোল্ট্রি খামারের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। খামার থেকে উৎপন্ন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে আশপাশের খাল ও ফসলি জমিতে, যার ফলে পরিবেশের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনও হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুল হালিম নামের এক ব্যক্তির নিজ বাড়ির মাঝখানে স্থাপিত লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির এই খামারটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কোনো আধুনিক সুবিধা নেই। বর্জ্য এলোমেলোভাবে ফেলার কারণে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা অন্তত আধা কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। এতে এলাকার মানুষ পরিবেশ দূষণের মারাত্মক হুমকিতে রয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খামারের বর্জ্য বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে আশপাশের জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে পুকুরে মাছ চাষ বন্ধ হয়ে গেছে এবং বায়ু ও পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।
বিন্দুরচর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন,
“এই খামারের দুর্গন্ধে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বিকেলের পর বাতাসে এমন দুর্গন্ধ ছড়ায় যে, ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে বসে থাকতে হয়। অভিযোগ করলে খামার মালিক উল্টো কটূকথা বলেন।”
একই গ্রামের রহিমা খাতুন বলেন,
“বৃষ্টির সময় গন্ধ আরও বেড়ে যায়। এমন অবস্থায় বাড়িতে অতিথি এলে লজ্জায় পড়তে হয়। বাচ্চারা খাবার খেতে গিয়ে বমি করে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।”
এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি চললেও স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খামার মালিক আব্দুল হালিম বলেন,
“এটি ছোট একটি খামার। দুর্গন্ধ না হওয়ার সব ব্যবস্থা করা আছে। আমি নিজে, বৃদ্ধ মা ও সন্তানদের নিয়ে এখানে থাকি—আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। তবুও আমি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করব যাতে গন্ধ না ছড়ায়।”
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ডা. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন,
“আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে পরিবেশবাদীরা বলছেন, লোকালয়ে এমন খামার স্থাপন সরাসরি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর লঙ্ঘন। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে এটি স্থানীয় জনস্বাস্থ্য ও কৃষির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।।





